দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক, প্রথম আলো’র স্টাফ রিপোর্টার ইন্দুরকানীর শরীফ নাসরুল্লাহ

তাওসিফ এন আকবর: (Feb 21, 2021) পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের খোলপটুয়া গ্রামের শরীফ নাসরুল্লাহ দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক, প্রথম আলোতে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে বিনোদন ও সংস্কৃতি বিভাগে কর্মরত আছেন।

পেশায় শিক্ষক শরীফ সুলতান মাহমুদ ও গৃহিণী লুৎফুন্নাহার দম্পতির ৫ সন্তানের মধ্যে একজন শরীফ নাসরুল্লাহ গত পাঁচ বছর ধরে লিখছেন প্রথম আলোতে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাথে সম্পৃক্ততা, থিয়েটারের সাথে সংযুক্তি, নাটক লেখা ও নির্দেশনাসহ অনেকখানি অভিজ্ঞতার ঝুলিসমেত সিনেমা নির্মাণের একরাশ স্বপ্ন নিয়ে মিডিয়া অঙ্গনের সাথে যুক্ত হন তিনি।

সাংবাদিকতার প্রায় শূন্য অভিজ্ঞতা, অনাগ্রহ এবং ভবিষ্যতে সাংবাদিক হওয়ার পরিকল্পনা না থাকা সত্বেও কিছু একটা করার অভিপ্রায়ে হঠাৎ করেই একদিন প্রথম আলোর একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করলেন। এরপর ভুলে যেতে যেতে ফিরতি কল পেয়ে নানা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রথম আলোর সাথে যুক্ত হলেন তিনি।

চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে জ্যেষ্ঠ শরীফ নাসরুল্লাহর শিক্ষাজীবনের শুরুটা কলারণ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায়। এরপরে টগড়া দারুল ইসলাম কামিল মাদ্রাসা থেকে এস.এস.সি (দাখিল) সম্পন্ন করেন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসায় ও মাঝপথে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করে এইচ এস সি সম্পন্ন করেন নরসিংদী জামিয়া কাসেমিয়াতে।

পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার শুরুটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর একই বিশ্ববিদ্যালয়ে।পেশা হিসেবে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার স্বপ্ন নিয়ে প্রথম সেমিস্টারে প্রথম স্থান অর্জন করার পরে হঠাৎ করেই সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জড়িয়ে যান।

শুরু হয় তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়ে অন্য জগতের সঙ্গে পরিচয়। যুক্ত হয়ে যান প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের গতানুগতি পড়ালেখায় আস্থা হারিয়ে ফেলেন তিনি। এক পর্যায়ে প্রথম স্থান থেকে সরে দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে আসে ফলাফল। শুরু হয় জীবনের লক্ষ্য নিয়ে টানাপোড়ন। এরই মধ্যে তিনি থিয়েটার নিয়ে ব্যাপক চর্চা শুরু করেন। দেশজুড়ে মঞ্চনাটক প্রদর্শনীর পাশাপাশি পাশের দেশ ভারতের কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, ত্রিপুরাতে নাটক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করেন।

থিয়েটারের সঙ্গে কাজ করতে করতে এক সময় তিনি ফিল্ম দেখা শুরু করেন। এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা করেন। কাজ করতে করতে একটা সময়ে চলচ্চিত্র নির্মাণকে ভালোবেসে ফেলেন। জড়িয়ে যান আষ্ঠেপৃষ্ঠে।নতুন করে স্বপ্ন দেখেন সিনেমা নির্মাণের।কাজ করেন সহকারী পরিচালক হিসেবে।২০১৮ সালে মাছরাঙা টেলিভিশনের জনপ্রিয় ধারাবাহিক “ইউনিভার্সিটি”তে-ও সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন।

দেশ-বিদেশের সিনেমা দেখেন, সিনেমা নিয়ে লেখেন। চিন্তা করেন বৃহৎ আকারে। দেশের বাইরে সিনেমা শিল্প নিয়ে যে সর্বস্তরের সুস্থ চর্চা আছে সেটা প্রতিষ্ঠিত করতে চান বাংলাদেশে। জনসাধারণের কাছেও দেশ-বিদেশের সিনেমাকে সহজে উপস্থাপন করার জন্য “ সিনেঘর “ নামক উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন। এসবের বাইরে ভাবেন উপকূল সাংবাদিকতা নিয়েও।

প্রথম আলোতে বিনোদন ও সংস্কৃতি বিভাগে সাংবাদিকতা তথা লেখালেখি করার পরেও দিনশেষে মনের মাঝে পুষে রেখেছেন সিনেমার নির্মাতা হওয়ার বাসনা। সবকিছুকে ছেড়ে দিলেও ছাড়তে চান না সুস্থ ধারার সিনেমা নির্মাণের স্বপ্ন, আলো ঝলমলে এই মাধ্যমে গল্প বলার ইচ্ছাটা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *