পথশিশুদের “মা” উপাধিপ্রাপ্ত খুলনার রুপসা উপজেলার নির্বাহী অফিসার ইন্দুরকানীর নাসরিন আক্তার
তাওসিফ এন আকবর: (Jan 17, 2021) খুলনা জেলার রুপসা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার কৃতি সন্তান নাসরিন আক্তার।তার জন্ম উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের মধ্য বালিপাড়া গ্রামে (মীরা বাড়ি)।
প্রায় দেড় বছর ধরে তিনি রুপসায় কর্মরত রয়েছেন।২০১৯ সালের ২৬ শে আগষ্ট রুপসা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ.এন.ও) হিসেবে যোগদান করেছেন তিনি।
এর আগে ১১ই জুলাই পূর্ববর্তী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইলিয়াছুর রহমান পদোন্নতি পেয়ে গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করলে পদটি শূন্য হয়।
ইন্দুরকানী উপজেলার বালিপাড়ার গর্বিত বাবা আঃহাই মীর ও রত্নগর্ভা মা রাহিলা খাতুনের কৃতি সন্তান নাসরিন আক্তারের শিক্ষাজীবন শুরু হয় ২৭নং মধ্য বালিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপরে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে এস এস সি পর্যন্ত বালিপাড়া ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন।এরপরে উচ্চমাধ্যমিকে পিরোজপুর মহিলা কলেজের ছাত্রাবাসে থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচ এস সি পাশ করেছেন।পরবর্তীতে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক বিভাগে ১১ তম মেধাতালিকায় ভর্তি হয়ে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন বা বিসিএস এর ৩০ তম ব্যাচে তিনি উত্তীর্ণ হন।
কর্মজীবনের শুরুতে বরিশালে এ.টি.ও হিসেবে দেড় বছর কর্মরত ছিলেন এরপরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের কর্মকর্তা ছিলেন।পরবর্তীতে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ছিলেন ৩ বছর।পুনরায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আরও দুই বছর চাকুরি করার পরে এসিল্যান্ড হিসেবে খুলনার ফুলতলা উপজেলায় জয়েন করেন এবং সেখানে সাড়ে আটমাস চাকুরি করেন।
পরবর্তীতে তিনি তৃতীয়বারেরমত খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে ২ বছর কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ পদোন্নতি পেয়ে খুলনার রুপসা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউ এন ও) হিসেবে যোগদান করেন এবং সেখানেই কর্মরত আছেন।
এছাড়াও তিনি ৩২ তম স্পেশাল ও ৩৩ তম বিসিএস এর প্রিলিতেও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।সরকারি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ দুটি বিদ্যালয় ও ইন্সপেক্টর চাকুরিতে উত্তীর্ণ হয়েও যোগদান করেননি।
কর্মজীবনে তিনি ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছেন।এসকল মহৎ গুনাবলীর জন্য সহযোগী কর্মকর্তাদের মাঝেও প্রিয় হয়ে উঠেছেন।বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের সংকটপূর্ণ সময়ে রুপসাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য তিনি সকলের ভরসার জায়গায় পরিণত হয়েছেন।
এছাড়াও সম্প্রতি প্রচন্ড শীতের রাতে গৃহহীন পথে ঘুমানো দুই শিশুকে উদ্ধার করে গোসল করিয়ে দিয়ে,খাবার খাইয়ে নতুন জামাকাপড় কিনে দেন এবং নিজ দায়িত্বে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করে প্রবল চেষ্টায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন।শিশুদুটি খুলনার শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে যাওয়ার সময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং ইউ.এন.ও নাসরিন আক্তারকে ছেড়ে যেতে চায়না, একপর্যায়ে তারা তাকে “আম্মু” বলে সম্বোধন করে। সেসময় প্রত্যক্ষদর্শীরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।