ভাষা আন্দোলনে পিরোজপুর
তাওসিফ এন আকবরঃ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও এর সাথে সম্পর্কিত পিরোজপুরের কিংবা পিরোজপুরে অবস্থান করে ভাষা সংগ্রাম, সংগ্রামের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী এবং ভাষা আন্দোলনের সংশ্লিষ্টতায় যে কোনো পরিসরে ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের সমন্বিত কোনো তালিকা ইন্টারনেট কিংবা কোনো প্রতিবেদন বা পুস্তকে পাওয়া যায় না।
ব্যক্তিগতভাবে জেলার বিভিন্ন প্রবীণ শিক্ষক, গবেষক, সাংবাদিক, বিশ্ববিদ্যালয় অধাপক সহ নানা স্তরের ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করেও এরকম কোনো তালিকা পাওয়া সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে ইন্টারনেটের বিভিন্ন পুরোনো আর্কাইভ অনুসন্ধান এবং গুগল এডভান্স সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করে দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল কর্তৃপক্ষ বেশকিছু নামের তালিকা সংগ্রহ ও সমন্বয় করতে চেষ্টা করেছে। সেই তালিকাটা দেখা যাবে এই প্রতিবেদনে।
- ভাষা সৈনিক মহিউদ্দিন আহমেদ বা মহিউদ্দিন আহমেদ
- কাজী খালেদা খাতুন (কিশোরী ভাষা সৈনিক)
- ভাষা সৈনিক মুহাম্মদ শামসুল হক চৌধুরী
- ভাষা সৈনিক হাবিবুর রহমান খান (জীবিত)
- তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া
- ডাঃ ক্ষীতিশ চন্দ্র মন্ডল
- ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চু
- হোসনে আরা বেগম (রওশন আরা বাচ্চু এর মেজ বোন)
ভাষাসৈনিক মহিউদ্দিন আহমেদ বা মহিউদ্দিন আহমেদ (রাজনীতিবিদ) ১৯২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি মঠবাড়িয়ার গুলিসাখালী সম্ভ্রান্ত মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অবসান ঘটিয়ে ১৯৯৭ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিনি ঢাকাস্থ মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শায়িত আছেন। তার বাবার নাম প্রাক্তন এমএলসি (১৯২০-১৯২৬) মরহুম মৌলভী আজাহার উদ্দিন মিয়া।প্রয়াত জাতীয় নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া আসনে চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনসহ ১৯৭৩, ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। একজন সুদক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবেও সুনাম ছিল তার।স্থানীয়দের কাছে পান্না মিয়া নামে সর্বাধিক পরিচিত জননন্দিত এই নেতা রাজনৈতিক জীবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অন্যতম সহচর ছিলেন। তিনি ভাষা আন্দোলনে অন্যতম অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৫ আগস্টের পর আ.লীগের দুঃসময়কালে মহিউদ্দিন আহমেদ কেন্দ্রীয় আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
কাজী খালেদা খাতুন একজন কিশোরী ভাষা সৈনিক। তিনি ভাষা আন্দোলনের সেই মহান সৈনিকদের অন্যতম যারা স্কুলের ছাত্র থাকাকালে ভাষা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৫২ সালে তার বয়স ছিলো মাত্র ১৩ বছর।১৯৩৯ সালের ৭ আগস্ট বরিশাল বিভাগের পিরোজপুরে সম্ভ্রান্ত কাজী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন খালেদা খাতুন।তার বাবার নাম কাজী মাজহার উদ্দিন আহমদ এবং মায়ের নাম হাকিমুন্নেসা খাতুন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ কাজী সামসুল হক খালেদা খাতুনের বড় ভাই।
ভাষাসৈনিক মুহাম্মদ শামসুল হক চৌধুরী পিরোজপুরের দুর্গাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। একজন নির্ভীক আইনজীবী ও বলিষ্ঠ প্রতিবাদী কর্মী হওয়ায় শামসুল হক একাধিকবার কারাবরণ করেছেন।
এছাড়াও, ভাষা সৈনিক হাবিবুর রহমান খান (জীবিত), তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, ডাঃ ক্ষীতিশ চন্দ্র মন্ডল, ভাষা সৈনিক রওশন আরা বাচ্চু, তার মেজ বোন হোসনে আরা বেগম পিরোজপুর থেকে ভাষা সংগ্রামের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ কিংবা ভাষা আন্দোলনের সংশ্লিষ্টতায় বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পরিসরে ভূমিকা রেখেছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়।
[এছাড়াও, আপনাদের কাছে যদি আরো কোনো তথ্য থাকে তাহলে উপযুক্ত প্রমাণ সহ জানালে আমরা তালিকা হালনাগাদ করে নিব। কোনো তথ্যে সংশোধন প্রয়োজন হলেও জানাতে পারবেন । যোগাযোগঃ 01911-221333]